১২ বছর বয়সেই স্নাতক!
গত বছর মহামারী শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের মাইক উইমারের অলস সময় কাটত স্কুলের অতিরিক্ত অনলাইন ক্লাসগুলো করে।
আজ এক বছর পর এই ১২ বছরের খুদে বালক একই সপ্তাহের ভিতর হাই স্কুল এবং কলেজ সম্পন্নের প্রস্তুতি নিচ্ছে!
চার বছরব্যাপী কোর্স শেষ করতে উইমারের লেগেছে সাকল্যে এক বছর- উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই বছর এবং দুই বছরের সহযোগী ডিগ্রি। আগামী ২১ মে উইমার রোয়ান-ক্যাবারাস কমিউনিটি কলেজ থেকে এবং ২৩ মে কনকর্ড একাডেমী হাই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করবেন। হাই স্কুলে উইমারই সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থী।
আসলে এই মেধাবী শিক্ষার্থী একই সাথে দুটি শ্রেণির ক্লাস করছিল এবং এক সময় বুঝতে পারল যে গতিতে সে পড়াশোনায় এগোচ্ছে তাতে আর কয়েকটি ক্লাস হলেই সে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে পারবে!
রোয়ান-ক্যাবারাস কমিউনিটি কলেজে উইমারের পরীক্ষায় প্রাপ্ত সব বিষয়ের গড় নাম্বার জিপিএ ৪, অন্যদিকে তার হাই স্কুলে প্রাপ্ত জিপিএ ৫.৪৫।
রোবোটিকসে আগ্রহ
বয়সে সহপাঠীদের চাইতে কয়েক বছরের ছোট হলেও উইমারের নাকি তাদের সাথে তাল মিলিয়ে চলাফেরায় সমস্যা হয় না।
রোবোটিকসের প্রতি ভীষণ আগ্রহ এই বালকের। সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাতকারে নিজেকে প্রকাশ করেছেন 'গণিত এবং বিজ্ঞানের মানুষ' হিসেবে।
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নয়, নিজেই ভুল করতে করতে অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে শিখে নিয়েছেন প্রোগ্রামিং এবং রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কলাকৌশল।
এইটুকুন বয়সে উইমারের রয়েছে 'রিফ্লেক্ট সোশ্যাল' নামে একটি নিজস্ব স্টার্ট আপও। সেখানে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত করে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী, নতুন, গতিশীল সামাজিক অভিজ্ঞতা প্রদান করা হয়।
স্টার্ট আপের জন্য উইমারের লক্ষ্য হলো 'স্মার্ট হোম টেকনোলজি' কীভাবে কাজ করে তা সহজ করে তুলে অন্যকে সহায়তা করা।
তিনি জানান, "আমার উদ্যোগের লক্ষ্য এমন প্রযুক্তির নির্মাণ যা মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলবে"।
উইমারের বাবা-মা জানিয়েছেন, তারা তাদের ছেলের জন্য অত্যন্ত গর্বিত।
তার মা মেলিসা উইমার বলেন, "যদি একটি দরজা বন্ধ থাকে তবে সে ঠিক আরও একটি বিকল্প পথ খুঁজে বের করবে। কিন্তু যেকোন উপায়ে সে নিজের লক্ষ্যগুলো অর্জন করবে"।
স্নাতকের জন্য বাকি আর অল্প ক'টা দিন। ইতিমধ্যে উইমার তার পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অনেকগুলো বিকল্প বিবেচনা করে রেখেছেন।
তবে আদতে সে যে এখনো ছোট শিশুটিই আছেন তা নিজে থেকেই মনে রাখতে চান এই জিনিয়াস। তাই সামনের দিনগুলোতে পড়াশোনা, গবেষণা আর স্টার্ট আপের পাশাপাশি খেলাধুলা ও অন্যান্য স্বাভাবিক 'শিশুসুলভ' কর্মকাণ্ডগুলোতেও উইমার নিজের জন্য সময় রাখতে চায়।
"অনেকেই আজকাল ভেবে থাকেন আমি নাকি আমার শৈশব হারিয়ে ফেলেছি। আমি শুধু তাদের বলতে চাই যে, আমি সবকিছুর জন্য সময় নিচ্ছি", বলেন উইমার।
- সূত্র-সিএনএন