রোবট কুকুর: মার্কিন বিমানবাহিনীর নতুন মারণাস্ত্র!
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোজাভ মরুভূমির বিমানক্ষেত্রে একটি রোবট কুকুরের হেঁটে বেড়ানোর দৃশ্য দেখা গেছে। তবে এই দৃশ্য কোনো সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্রের শ্যুটিংয়ের নয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ যুদ্ধে ব্যবহার উপযোগী এই রোবট কুকুরটির অনুশীলনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালায় মার্কিন বিমানবাহিনী। প্রতিকূল পরিবেশে বিমান অবতারণ করলে মানুষ বের হওয়ার আগে এই রোবট কুকুর বের হয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম।
এই রোবট কুকুরটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর এডভান্সড ব্যাটেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এবিএমএস) নতুন সংযোজন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডাটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে সম্ভাব্য আক্রমণ ও হুমকি চিহ্নিত করতে সক্ষম রোবটটি।
বিমানবাহিনীর একুইজিশন টেকনোলজি অ্যান্ড লজিস্টিকসের সহকারী সেক্রেটারি উইল রোপার জানান, ভবিষ্যতে যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকরা তথ্যের অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হবে, প্রয়োজন হবে ন্যানো সেকেন্ডে তথ্য বিশ্লেষণে সক্ষম এমন প্রযুক্তির। "ভবিষ্যতে যুদ্ধক্ষেত্রে তথ্যই হবে স্যাটেলাইট, জেট ফুয়েলের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।"
আগস্টের ৩১ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখ পর্যন্ত দেশজুড়ে ৩০টি জায়গায় এই এবিএমএস অনুশীলন হয়। এর মধ্যে একটি নেভাডার নেলিস বিমানঘাঁটি। ডেভিল রেইডার নামে পরিচিত বিমানবাহিনীর ৬২১ তম কন্টিনজেন্সি রেসপন্স গ্রুপের সদস্য মাস্টার সার্জেন্ট লি বোস্টন জানান, " কুকুরগুলো আশেপাশের পরিবেশের ব্যাপারে তথ্য দিতে সক্ষম, ফলে সৈনিকরা বিমান থেকে দূরে না গিয়েই সম্ভাব্য হুমকি সম্পর্কে জানতে পারবে।"
কুকুরগুলোর নাম দেয়া হয়েছে ভিশন ৬০ ইউজিভি। প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ঘোস্ট রোবটিক্স অফ ফিলাডেলফিয়া রোবটের নামকরণ করে। যেকোনো স্থান ও পরিবেশে এই রোবটগুলো তথ্য সংগ্রহের কাজ করতে সক্ষম।
প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে জানানো হয়, এই রোবটের অন্যতম সুবিধা হলো, অন্যান্য রোবটের তুলনায় এই রোবটের যান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে আনা হয়েছে। যান্ত্রিক জটিলতা কমানোর ফলে আরও টেকসই হয়েছে, বৃদ্ধি পেয়েছে এর স্থায়িত্ব ও চলাফেরার সাবলীলতা।
ভবিষ্যতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যতম অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হতে যাচ্ছে এই রোবট। বিমানবাহিনীর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জেনারেল জন রেয়মন্ড জানান, যুদ্ধক্ষেত্রে, প্রতিকূল পরিবেশে উপযুক্ত ভাবে এবিএমএস ব্যবহারের উপায় খুঁজছি। বিমানবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ জেনারেল চার্লস ব্রাউন জুনিয়র এব্যাপারে বলেন, "যুদ্ধক্ষেত্রে জয়লাভের জন্য আমাদের সৈনিকদের যুদ্ধের গতি হওয়া প্রয়োজন ইন্টারনেটের গতির মতো দ্রুত।"