রেসলার নয়, আসল যোদ্ধা ছিলেন গ্ল্যাডিয়েটররা

বর্তমান সময়ে রেসলিংয়ের মাধ্যমে একদল লোক নিজেদের মধ্যে মারামারি করে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেন। লড়াইয়ের ময়দানে নেমে সাধারণ ও অসাধারণ দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার এই রেওয়াজ বেশ পুরনো। বর্তমান সময়ে কাজটি রেসলাররা করলেও প্রাচীন রোমে এই কাজটি যারা করতেন তাদের বলা হতো গ্ল্যাডিয়েটর। এই দু’দলের উদ্দেশ্য মানুষকে বিনোদিত করা হলেও তাদের পদ্ধতি ছিল ভিন্ন। রেসলারদের পুরো বিষয়টিই থাকে স্ক্রিপ্টেড। স্ক্রিপ্ট অনুযায়ীই তারা মঞ্চে ওঠেন মারামারি করতে। তবে গ্ল্যাডিয়েটররা ছিলেন আসল যোদ্ধা। জীবন বাজি রেখেই তারা কোলাসিয়ামের যুদ্ধের ময়দানে প্রবেশ করতেন। লড়াই করতেন অন্য কোনো মানুষ কিংবা প্রাণীর সঙ্গে।
এই লড়াইয়ের মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষ ও রাজাদের আনন্দ দিতেন। এটি মূলত রোমান সাম্রাজ্যের একটি প্রাচীন রীতি। এই রীতি অনুসারে গ্ল্যাডিয়েটররা হাজার হাজার দর্শকের সামনে কেবল অন্য যোদ্ধার সঙ্গেই লড়াই করতেন এমন নয়, এর বাইরেও দাগি আসামি কিংবা হিংস্র বন্যপ্রাণীদের সঙ্গেও লড়াই করতেন।
লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়া ছিলো গ্ল্যাডিয়েটরদের কাজ। তাদের নিয়ে বর্তমান সময়ে নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন চলচ্চিত্রও। আসুন জেনে নেই তাদের সম্পর্কে কিছু তথ্য।

১. ময়দানে মৃত্যুর পর গ্ল্যাডিয়েটরদের দেহ কোলাসিয়ামের একটি বিশেষ ফটক দিয়ে বের করে আনা হতো
২. সাহস ও সম্মানের সঙ্গে মৃত্যবরণ না করলে, টেনে হিঁচড়ে তাদের মরদেহ বের করা হতো
৩. যুদ্ধের ময়দানে মৃতের ভান ধরার কোনো সুযোগ ছিলো না, তারা নিশ্চিত করতো ওই গ্ল্যাডিয়েটর আসলেই মারা গেছেন কিনা
৪. গ্ল্যাডিয়েটররা সবাই দাস ছিলেন না, অনেকেই স্বেচ্ছায় গ্ল্যাডিয়েটর হতেন
৫. লড়াইয়ের সময় ভয় পেলে মৃত্যু আরও ভয়ংকর হয়ে নেমে আসতো গ্ল্যাডিয়েটরদের জন্য
৬. অনেকেরই বিশ্বাস ছিলো, গ্ল্যাডিয়েটর হওয়ার চেয়ে আত্মহত্যা করা ভালো
৭. রোমানদের বিশ্বাস ছিলো, গ্ল্যাডিয়েটরের রক্তে মৃগীরোগ সারে
৮. গ্ল্যাডিয়েটররা ছিলেন যৌন আবেদনময়ী
৯. লড়াইক্ষেত্রে একজন গ্ল্যাডিয়েটরের সম্মান আর সাহসই নির্ধারণ করে দিতো তার শেষকৃত্য কীভাবে হবে
১০. শুরু পুরুষরাই না, প্রাচীন রোমে নারী গ্ল্যাডিয়েটরও ছিলেন
১১. গ্ল্যাডিয়েটরদের মতো পোশাক পরতে পছন্দ করতেন রোমান সম্রাটরাও
১২. শুধু মানুষের সঙ্গেই না, প্রাণীদের সঙ্গেও যুদ্ধ করতেন গ্ল্যাডিয়েটররা
১৩. যুদ্ধের ধরণ ও কৌশলের ওপর নির্ভর করতো গ্ল্যাডিয়েটরদের র্যাংকিং
১৪. রোমান সাম্রাজ্যে ৭০০ বছর টিকে ছিলো গ্ল্যাডিয়েটরদের মধ্যকার এই লড়াই।