মহাকাশে তৈরি হবে গ্যাসস্টেশন!
দ্রুতবেগে ধাবমান মহাজাকাশ বর্জ্য এখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ও স্যাটেলাইটের জন্য বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠছে। তাই বিপজ্জনক এই বর্জ্যকে রিসাইকেল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
এরইমাঝে পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ থেকে রকেটের জ্বালানি তৈরির প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠান নিউম্যান স্পেস। অর্থাৎ এসব বর্জ্য সরাতে মহাকাশে গ্যাসস্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রতিষ্ঠানটি মহাকাশে ভেসে বেড়ানো যেসব পরিত্যক্ত বস্তু পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, সেগুলোকে রিসাইকেল করে রকেটের জ্বালানিতে পরিণত করবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীর কক্ষপথে পুরোনো মহাকাশযানের বিস্তর ধ্বংসাবশেষে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মৃত কৃত্রিম উপগ্রহ ও বাতিল হয়ে যাওয়া রকেটের যন্ত্রাংশ ঘণ্টায় ২৮ হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটে বেড়াচ্ছে মহাশূন্যে।
দ্রুতবেগে ধাবমান এসব বর্জ্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) ও কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে উঠছে। এই গতিতে ছুটতে অতি ক্ষুদ্র একটি স্ক্রু, এমনকি রঙের কণাও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের জন্য বড় বিপদের কারণ হতে পারে। বিপদে পড়তে পারেন সেখানে অবস্থানরত নভোচারীরাও।
গত সপ্তাহে মিসাইল ছুড়ে নিজেদের স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছে রাশিয়া। স্যাটেলাইটটির ধ্বংসাবশেষও বিপজ্জনক বর্জ্যে পরিণত হয়েছে। আমেরিকা বলছে, এই বর্জ্য বিশ্বের সব দেশের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।
এসব বর্জ্য একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খেলে কক্ষপথ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়বে। বিজ্ঞানীরা এই অবস্থাকে কেসলার ইফেক্ট বলেন।
এমন পরিস্থিতিতে নিউম্যান স্পেস বলছে, তারা 'ইন-স্পেস ইলেকট্রিক প্রপালশন সিস্টেম' নামে একটি প্রযুক্তি তৈরি করবে। এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে পৃথিবীর কক্ষপথের কাছাকাছি থাকা মহাকাশযানের আয়ু বাড়ানো, স্যাটেলাইটগুলোকে নড়ানো কিংবা কক্ষচ্যুত করা হবে।
এই প্রপালশন সিস্টেমের জন্য জ্বালানি হিসেবে মহাকাশে পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশকে গ্যাসে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে নিউম্যান স্পেস। এ লক্ষ্যে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে তারা।