টানা এক বছর পানি না খেয়েই ‘সুস্থ’ আছেন এই নারী
পানি না খেয়ে কেবল ফলমূল ও শাকসবজি খেয়েই এক নারী কাটিয়ে দিলেন পুরো এক বছর। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি।
সোফি প্যাট্রিক নামে ওই নারী একজন পুষ্টিবিদ। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে তার বসবাস। তিনি দাবি করেছেন, পানি না খাওয়ার ফলেই বরং তার উপকার হয়েছে। তার শরীরে আগে যে সমস্যগুলো ছিল তা দূর হয়েছে।
তার এই বক্তব্য অনলাইনে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি অনেকেই তার সমালোচনা করেছেন।
প্যাট্রিক জানান, তিনি আগে শরীরের হাড়ের জোড়াগুলোতে ব্যাথা অনুভব করতেন, তার চোখ ফোলা থাকত, খাবার খেলে এলার্জি হতো এবং হজমে সমস্যা ছিল। তার ভাষ্য, শুষ্ক উপবাসের পর থেকে তার এসব সমস্যা কেটে যেতে শুরু করে। তিনি দিনে ১৩-১৪ ঘন্টা কোনো তরল পান করেন না। যখন করেন তখন কেবলমাত্র ফলমূল ও সবজি দিয়ে বানানো জুস খান। একবার তিনি সর্বোচ্চ ৫২ ঘণ্টা কোনো ধরনের তরল পান না করে ছিলেন। তবে তার স্বপ্ন, শুষ্ক এই উপবাস ১০ দিন পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া। গত এক বছরে সোফি প্যাট্রিক কোনো ধরনের বোতলজাত মিনারেল ওয়াটারও পান করেননি।
তিনি মনে করেন, শরীরের জন্য পানির প্রয়োজন নেই। পানির প্রয়োজন কেবল আমাদের মস্তিষ্কের তেষ্টা মেটাতে।
তার মতে, আমাদের মনেরই কেবল পানির প্রয়োজন হয়। আমি জানি আমি কোনো ধরনের পানিশূন্যতায় ভুগছি না। শুরুর দিকে এটা বেশ কঠিন ছিল তবে পরে মনে হয়েছে এটা বেশ স্বস্তিদায়ক। এটা সবচেয়ে ভালো মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা। খাওয়া এবং পান করার পেছনে যে সময় ব্যয় হয় তা আমি অন্য কাজে ব্যয় করতে পারি।
এই পুষ্টিবিদ জানান, তার ত্বকের ফোলার জন্য ডাক্তার তাকে প্লাস্টিক সার্জারির পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তার অন্য একজন বন্ধু তাকে এই শুষ্ক উপবাসের কথা জানালে তিনি এটি শুরু করেন এবং দ্রুত সময়েই পরিবর্তন লক্ষ্য করেন।
তিনি বলেন, “আমার ত্বক থেকে ফোলা ফোলা ভাব কমতে থাকলে আমি এটি নিয়ে আরেকটু গবেষণা করতে আগ্রহী হই। আমি আমার সারাজীবন বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়িয়েছি।
“বোতল থেকে পানি পান করার ফলে কিডনিকে বেশি কাজ করতে হয় এবং এর ফলে শরীরের সমস্ত পুষ্টি ধুয়ে যায়। শরীরে পানি জাতীয় পদার্থের চাহিদা পূরণ করতে আপনাকে খনিজ পানি পান করতে হবে না। এটা কেবল আপনার দেহকে স্ফিত করবে। আপনি যখন একবার শুষ্ক উপবাস শুরু করবেন, তখন বুঝতে পারবেন আপনার শরীরের আসলেই পানির প্রয়োজন নেই।” বলেন তিনি।
তবে সোফি প্যাট্রিক এ কথা স্বীকার করেছেন যে শুষ্ক উপবাস সবার জন্য না। তিনি আরও বলেছেন, তিনি যখন এ উপবাস শুরু করেন তখন তার পরিবারও বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তারা তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, কোনো ধর্মীয় অনুশাসন থেকে তিনি এটি করেছেন কিনা। কিন্তু সোফির ভাষ্য, এ বিষয়ে তিনি নিজেকে ব্যাখ্যা দাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
৩৫ বছর বয়সী এই নারীর ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার সংখ্যা ১৭ হাজার। নিজের ফলোয়ারদের তিনি বলেন, যারা শুষ্ক উপবাস শুরু করতে চান তাদের কয়েকদিন আগে থেকেই ফল এবং জুস খাওয়ার অভ্যাস করে তা দেহের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।